প্রতিদিন ২৪ ডেস্ক
লম্বা ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি। ডিফেন্ডার। ভাগ্যে তাই গোল
করা খুব একটা হয় না। তবে কাল একটা মহামূল্যবান গোল করলেন রাফায়েল ডি আন্দ্রেস।
সতীর্থ আরিফের ফ্রি-কিকে দারুণভাবে মাথা ছুঁইয়ে বল পাঠিয়েছেন জালে। মুক্তিযোদ্ধার
পক্ষে গোলটি করতে কাজে লেগেছে সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়া তাঁর শরীরটা।
এই গোল ম্যাচটাকে রাখল অমীমাংসিত। লিগের শীর্ষ দুই দল প্রথম পর্বে কেউ কাউকে হারাতে পারল না। আবাহনী-মুক্তিযোদ্ধা গুরত্বপূর্ণ লিগ লড়াই ১-১। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগটা তাই আকর্ষণ পুরোপুুরি ধরে রাখল। আবাহনী কাল জিতলে মুক্তিযোদ্ধার চেয়ে ৬ পয়েন্টে এগিয়ে যেত। এক মৌসুম পর লিগ শিরোপা পুনরুদ্ধারে দলটির যাত্রাপথও হয়ে উঠত অনেক মসৃণ।
কিন্তু আবাহনীর চাওয়া পূরণ হয়নি। মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে তাদের পয়েন্টের ব্যবধান ৩-এ অক্ষুণ্ন থাকল। প্রথম পর্ব শেষে ১০ ম্যাচে ৭ জয় ৩ ড্রয়ে আবাহনীর পয়েন্ট ২৪। মুক্তিযোদ্ধার ২১। ৯ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে বিজেএমসি তৃতীয় স্থানে। ধারণা করা হচ্ছিল, শিরোপা লড়াইয়ে থাকবে অন্তত পাঁচটি দল। শেখ জামাল ও শেখ রাসেলের ব্যর্থতায় লিগটা এখন আসলে ত্রিমুখী লড়াইয়ের মঞ্চ। মাত্র ১১ পয়েন্ট পাওয়া জামাল-রাসেল নিজেরাও শিরোপার স্বপ্ন এখন আর দেখতে পারছে না। আশায় বুক বেঁধে আছে আবাহনী ও মুক্তিযোদ্ধা।
গত পাঁচটি ম্যাচই জেতা আবাহনী কালও গোল পেয়ে যায় দ্রুতই। দশম মিনিটেই আবাহনীর অনুকূলে পেনাল্টি। ফ্রাঙ্কের ক্রসে তৌহিদ পোস্টে হেড করতে লাফিয়ে উঠলে মুক্তিযোদ্ধার অধিনায়ক টিটু তাঁকে টেনে ফেলে দেন। রেফারি আজাদ রহমানের দেওয়া পেনাল্টি কাজে লাগান ফ্রাঙ্ক নিজেই।
আবাহনীর খেলাটা যেন ওখানেই শেষ। এরপর আক্রমণে আর সেভাবে যেতে পারেনি। গোটা দলের খেলায় মনে হচ্ছিল পেনাল্টি গোলটা ধরে রেখে মাঠ ছাড়তে পারাটাই হবে বড় পাওয়া। কিন্তু ৬৫ মিনিটে রাফায়েলের গোল (লিগে এটি তাঁর প্রথম গোল) উল্টে দেয় আবাহনীর হিসাব। যদিও খেলার ধারা অনুযায়ী জেতা উচিত ছিল মুক্তিযোদ্ধারই।
মুক্তিযোদ্ধায় কাল রাফায়েলের স্বদেশি মিডফিল্ডার লিমা ছিলেন না চোটের কারণে। তার পরও দ্বিতীয়ার্ধে মুক্তিযোদ্ধার মাঝমাঠ হয়ে ওঠে বেশ সংগঠিত। কোচ শফিকুল ইসলাম এই সময় পাঁচজন মিডফিল্ডার ব্যবহার করেছেন। মামুনুল, মারুফ, ডিভাইন, শাকিল ও নাসির মিলে আক্রমণ গড়েছেন একের পর এক। শক্তিশালী মাঝমাঠই মুক্তিযোদ্ধার আক্রমণের ভরকেন্দ্র হয়ে রইল। জয় না পাওয়া দলটার জন্য খানিকটা আক্ষেপেরই।
আবাহনীকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি দ্বিতীয়ার্ধে। তাই লিগের প্রথম পর্বের সবচেয়ে বড় ম্যাচটা সেভাবে জমেনি। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, গত চারটি পেশাদার লিগে আবাহনী হারেনি মুক্তিযোদ্ধার কাছে। পাঁচটিতে আবাহনীর জয়। তিনটি ড্র। অপরাজিত রেকর্ডটা অক্ষুণ্ন রাখতে পারা কাল আবাহনীর জন্য সান্ত্বনা হতে পারে। কিন্তু এভাবে খেলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন না দেখাই ভালো!
আবাহনীর কোচ আলী আকবর পোরমুসলিমিও সেটিই বললেন, ‘খেলোয়াড়েরা ব্যবধান বাড়ানোর কোনো চেষ্টাই করল না। এটা খুবই হতাশার। সুযোগ থাকলে দ্বিতীয়ার্ধে ৭-৮ জন খেলোয়াড়ই বদলে ফেলতাম। এটা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখা কোনো দলের খেলা হতে পারে না।’
সত্যিই তাই। আবাহনীর জন্য এটা সতর্কসংকেত।
আবাহনী: সোহেল, নাসির, সামাদ, ওয়ালি ফয়সাল, প্রাণতোষ, মামুন মিয়া, তৌহিদুল (লিংকন), ফ্রাঙ্ক, ইব্রাহিম, পল।
মুক্তিযোদ্ধা: মোস্তাক, আরিফ (নাসির), রাফায়েল, রেজাউল (মারুফ), টিটু, ড্যামি, শাকিল, মামুনুল, ডিভাইন, সানডে (মিঠুন), এমিলি।
No comments:
Post a Comment